হজের সময় নবীজি যে ৬ স্থানে বিশেষ দোয়া পড়তেন

ফাইল ছবি
মুসলিম উম্মাহর ভ্রাতৃত্বের মহাসম্মেলন হজ। ইসলামের ৫টি স্তম্ভের চতুর্থটি হজ, যা অবশ্যই পালনীয়। চাঁদ দেখাসাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন পবিত্র হজ পালন হবে। তার আগেই হজযাত্রীসহ প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এ পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানা। আর কোথায় কোথায় দোয়া পড়েছেন আমাদের প্রিয় নবী, সেটি জানা থাকলে সহজেই আপনি তা করে নিতে পারবেন।
দোয়া বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর মুখাপ্রেক্ষিতা ও অনুনয়-বিনয় শির নত প্রকাশের মাধ্যম হলো দোয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়াকেই সর্বোচ্চ ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত করে বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯৬৯)
তিনি আরও বলেছেন, ‘দোয়ার চেয়ে বেশি প্রিয় আল্লাহর কাছে অন্য কিছু নেই।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮৭০)
হজে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দোয়ার ছিল নিবিড় সম্পর্ক। তিনি তাওয়াফের সময় তার রবের কাছে দোয়া করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৮৯২)
সাফা ও মারওয়ার ওপর দাঁড়িয়ে দোয়া করেছেন; আরাফায় উটের ওপর বসে হাত সিনা পর্যন্ত উঠিয়ে মিসকিন যেভাবে খাবার চায় সেভাবে দীর্ঘ দোয়া ও কান্নাকাটি করেছেন; আরাফার যে জায়গায় তিনি অবস্থান করেছেন সেখানে স্থির হয়ে সূর্য হেলে গেলে সালাত আদায় করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া করেছেন।
মুজদালিফার মাশআরুল হারামে ফজরের সালাতের পর আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ সময় আকুতি-মিনতি ও মোনাজাতে রত থেকেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ১২১৮)
তাশরিকের দিনগুলোতে প্রথম দুই জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ দোয়া করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ১৭৫১)
ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হজ ছিল ছয়টি স্থানে বিশেষভাবে দোয়ায় পূর্ণ। প্রথম সাফায়, দ্বিতীয় মারওয়ায়, তৃতীয় আরাফায়, চতুর্থ মুজদালিফায়, পঞ্চম প্রথম জামরায় এবং ষষ্ঠ দ্বিতীয় জামরায়। (জাদুল মাআদ: ২/২৬৩)
বিশেষভাবে আরাফার দিন বিশেষ গুরুত্বসহ দোয়া করা উচিত যারা হজের উদ্দেশ্যে সেখানে অবস্থান করছেন।
আয়েশা (রা.) বলেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের চেয়ে উত্তম এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহ সবচেয়ে বেশি বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেন; নিশ্চয়ই তিনি নিকটবর্তী হন; অতঃপর আরাফাবাসীকে নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গৌরব করে বলেন, এরা কি চায়?’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪৮)
আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘সর্বোত্তম দোয়া হচ্ছে আরাফার দিনের দোয়া...।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৮৫)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘(আরাফার দিন) আল্লাহ তাআলা নিকটতম আসমানে আসেন এবং পৃথিবীবাসীকে নিয়ে আসামানের অধিবাসী অর্থাৎ ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলেন, দেখো, আমার বান্দারা উষ্কখুষ্ক চুলে, ধুলামলিন বদনে, রোদে পুড়ে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে সমবেত হয়েছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশী।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: