• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

শত বছর ধরে ঢাকাকে সার্ভিস দিলেও মেলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ১ জুলাই ২০২৪

ফন্ট সাইজ
শত বছর ধরে ঢাকাকে সার্ভিস দিলেও মেলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই

দেখতে কবুতরের ঘরের মতো এই রুমগুলোর সাইজ আনুমানিক ৫ ফুট বাই ৭ ফুট। আবার কোনোটির ৬ ফুট বাই ৮ ফুট। একরুমের এই ঘরগুলোতে একসাথে বাস করেন কমপক্ষে ছয়জন। কোনো রুমে স্বামী-স্ত্রী-সন্তানদের সাথে থাকেন শ্বশুর-শাশুড়িও। তেমনি একজন মেঘনা দাস। পরিবার নিয়ে এক রুমেই বসবাস তার। 

এক রুমেই থাকা-খাওয়া, এখানেই ঘুমানো, সবই করতে হয় তাদের। বলছি- রাজধানীর বংশালের আগাসাদেক এলাকার শতাব্দির পুরোনো মিরনজিল্লা কলোনির হরিজনদের কথা। 

বাসিন্দারা বলছেন, রাজধানী ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এখানেই অন্তত তিন থেকে চার শ বছর ধরে হরিজনদের বংশধরেরা বসবাস করে আসছেন। শত শত বছর ধরে থাকলেও কোনো জমির মালিক হতে পারেননি তারা। জমির মালিকানার পাওয়ার অধিকার থাকলেও যেনো দয়া নিয়ে জীবন পার করছেন তারা। উল্টো উচ্ছেদ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। অথচ বৃটিশ আমলে ভারত থেকে তাদের এখানে আনা হয়েছিল এই অঞ্চলকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য। কিন্তু যারা এই শহরকে পরিচ্ছন্ন রেখে আলোকিত করেন সেই হরিজনরাই শতকের পর শতক কেটে গেলেও রয়ে গেছেন অন্ধকারে, অবহেলায়।

শতকের পর শতক এখানে হরিজনরা বসবাস করলেও এই জমির মালিক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। অথচ অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন জন্মের আগেই এখানেই হরিজনদের বসবাস। কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ক্ষমতার বলে হরিজনদের উচ্ছেদ করে বানাতে চায় বহুতল মার্কেট। 

গত ১৩ জুন বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করেই উচ্ছেদ অভিযানে এসে বেশকিছু ঘরও ভাঙে সংস্থাটি। উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলো এখন রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে। তীব্র প্রতিবাদের মুখে সরে যায় সিটি করপোরেশন। আদালত দেন এক মাসের স্থগিতাদেশ। ক্ষতিগ্রস্ত পূজা দাস বলেন- রোহিঙ্গারাও তাদের চেয়ে ভালো আছে।

এই কলোনিতে ঘরহীনদের ঘর না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না বলে জানালেন হরিজনদের সেবায় গঠিত হরিজন সেবক সমিতির নেতারা। 

হরিজনদের উচ্ছেদ করে মার্কেট বানানোর সমালোচনা করে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন'র সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, মার্কেট বানানোর আগে হরিজনদের মাথা গোঁজার ঠাই নিশ্চিত করতে হবে।

আদালতের আদেশ পেয়ে উচ্ছেদ থেকে সরে আসার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, বিকল্প ব্যবস্থা করেই পরবর্তীকালে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করবেন তারা। 

এই শহরে সুবিধাবঞ্চিত হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষেরাও বাঁচবে মানুষের মতো করে, পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। মুছে যাবে শত বছরের দুঃখ, এমনটাই প্রত্যাশা হরিজনদের।

বিভি/এসএইচ/টিটি

মন্তব্য করুন: