• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

আটাব সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচারের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২২:১৮, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ২২:২১, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ফন্ট সাইজ
আটাব সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচারের অভিযোগ

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ- আটাবের সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সংগঠনটির কার্য নির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে সবুজ মুন্সী নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিজ প্রতিষ্ঠান নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের প্যাডে পদত্যাগের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, আটাব কমিটির স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম উল্লেখপূর্বক সাধারণ সদস্যদের কর্তৃক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় বিব্রতবোধ করছেন তিনি।  

এর আগে আটাব সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলে ধরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার মহাপরিচালক, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল এর মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি। 

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসীজ ও সায়মন হলিডেজ'র মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষতিক ব্যবস্থা নেয়ারও জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। 

নিজে তার অভিযোগগুলো হুবহু তুলে ধরা হল:


১। অর্থ আত্মসাৎ: ২০১৭- ২০১৯ মেয়াদে ৬ষ্ঠ ও ৭ম কার্যকরী সভায় আটাব অনলাইন গঠনের নিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিগত ০২.০৪.২০১৯ ইং তারিখে আটাব সদস্যদের নিয়ে জরুরী সাধারণ সভায় এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ, আটাব এর অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান আটাব অনলাইন লিঃ গঠনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে। যা আটাব সংঘ স্মারক ও আটাব সদস্যদের স্বার্থের পরিপন্থি। উল্লেখ্য আটাবের অফিসিয়াল ই-মেইল atab@citach.net থেকে ই-মেইল এর মাধ্যমে বিষয়টি ২৮.০৪.২০১৯ ইং তারিখে আটাব সদস্যদেরকে অবহিত করেন। ১৯.০৪.২০১৯ ইং তারিখে আটাবের প্যাডে চিঠি লিখে আটাব সদস্যদেরকে শেয়ার ক্রয়ের আহবান করেন। ২৯.১২.২০২০ ইং সালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়, MOCAT আটাব অনলাইনের নিবন্ধনের আবেদন না মঞ্জুর করা সত্ত্বেও ০৫.০৭.২০১৪ ইং তারিখ পর্যন্ত অবৈধ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে। আটাব সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম আরেফ এর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এয়ার স্পীড প্রাইভেট লিঃ এর নামে ভিন্ন ভিন্ন চেক ইস্যু করে মোট ৯৭,৫৪,৮৪৬.০০ টাকা এবং মহা সচিব মিসেস আফসিয়া জান্নাত সালেহ এর মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান সায়মন ওভারসীজ লিঃ এর নামে মোট ৭৭,২১,১১৭.০০ টাকার চেক ইস্যু করে আত্মসাৎ করে। এছাড়াও বিভিন্ন জাল ইনভয়েস এর মাধ্যমে আটাবের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচন ও আটাব মেলাসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে যার স্বপক্ষে কোন বিল বা ইনভয়েস জমা দেওয়া হয়নি।

২। অর্থ পাচার: ২৭.০২.২০১৪ ইং তারিখে আটাবের ৩২তম ফেম ট্রিপের ১ম ৪১ জন সদস্যদের ল্যান্ড প্যাকেজের জন্য আটাব জাপানি ট্যুর অপারেটর TRAVEZEE TOURISM JAPAN এর সাথে যোগাযোগ করলে উক্ত কোম্পানীর ৬৬,০১,০০০.০০ জাপানি ইয়েন অর্থাৎ ৫৫,৭৭,৮৪৫.০০ টাকার বিল ই-মেইলে প্রদান করেন। আটাবের বিদেশে টাকা পাঠানোর অনুমতি না থাকায় তৎকালিন সহ-সভাপতি ও বর্তমান মহা সচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ তার প্রতিষ্ঠান সায়মন ওভারসীজ এর মাধ্যমে জাপানে টাকা পাঠানোর প্রস্তাব করেন। সে লক্ষে আটাবের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা, কমিটির মহা সচিব ও অর্থ সচিবের স্বাক্ষর সহ অনুমোদন করেন। আটাবের ট্রাষ্ট ব্যাংকের হিসাব নং-১৪১, চেক নং-সি-৭১৩৪৮৩৬, তারিখ- ২৭.০১.২০২৪ ইং মারফত সায়মন ওভারসীজ কে মোট ৫৫,৭৭,৮৪৫.০০ টাকা প্রদান করেন। সায়মন ওভারসীজ অবৈধভাবে জাপানে উল্লেখিত ৫৫,৭৭,৮৪৫.০০ টাকা পাচার করেন। যা অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এছাড়াও গত ১৫ বছরে যতগুলো ফেম ট্রিপ হয়েছে সকল টাকা তারা অবৈধভাবে মহাসচিবের প্রতিষ্ঠান সায়মন ওভারসীজ ও সায়মন হলিডেজ এর মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করেছেন।

বিগত ২০১৮ সাল থেকে আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এমিরেটস হলিডেজের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা ফি ও প্যাকেজের টাকা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে আরব আমিরাতে পাচার করছে। এছাড়াও বিভিন্ন অফিসে টাকা তারা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে থাকে।

৩। এ্যাম্বেসী সিন্ডিকেট: আটাব সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম আরেফের প্রতিষ্ঠান মডার্ণ ওভারসীজ এর বিরুদ্ধে কুয়েতের ভিসা প্রসেসিং এ ৩০-৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। যা 01.03.2025 ইং তারিখে The Business Standard পত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য বাংলাদেশে প্রায় ২,৯০০ রিক্রুটিং এজেন্সী থাকলেও মাত্র ৬টি এজেন্সী কুয়েত এ্যাম্বেসীতে ভিসার কাজ করতে পারে। এ সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছেন আটাব সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম আরেফ। পত্রিকার প্রতিবেদনের কপি সংযুক্ত করা হলো।

আটাব সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম আরেফ আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা বাহাউদ্দিন নাসিমের আত্মীয় পরিচয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসী, পেটুয়াবাহিনী এবং প্রশাসনের সহায়তায় ২০১১ সাল থেকে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন দিয়ে ২ বার মহা সচিব এবং বর্তমান সভাপতি হিসেব আটাব দখল করে আছেন। ভৌতিক ভোটার তালিকা, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট এবং প্রতিপক্ষকে কেন্দ্র থেকে বের দিয়ে স্বঘোষিত ফলাফল নিয়ে বার বার নির্বাচিত হয়ে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেছেন।

জুলাই-আগষ্ট ২০২৪ ইং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরোদ্ধে যে গণ আন্দোলন হয়েছিল তা প্রতিহত করার জন্য শেখ হাসিনার বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে ৩রা আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে যে ষড়যন্ত্রমূলক সভাটি করেছিলেন সেখানে বর্তমান আটাব সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম আরেফ উপস্থিত ছিলেন।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ পরিচয়দানকারী আটাব সভাপতি আরেফ এর বিরুদ্ধে কোন ট্রাভেল এজেন্সী এমনকি কোন এয়ারলাইন্স ০৫ আগষ্ট ২০২৪ ইং এর পূর্বে কোন কথা বলার সাহস পাননি। এয়ারলাইন্সগুলো তার অনৈতিক গ্রুপ ব্লকিং এর কাজে সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়েছিল।

আটাব মহা সচিব মিসেস আফসিয়া জান্নাত প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মুহায়মিন সালেহ্ এর কন্যা। জনাব সালেহ্ আওয়ামীলীগ এর প্রভাব খাটিয়ে একাধিকাবার আটাবের সভাপতি হয়েছিলেন। জি.ডি.এস (এ্যামাডিউস) এর শেয়ার, বিভিন্ন এয়ার লাইন্সের জি.এস.এ এবং সায়মন সেন্টার সহ শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আফসিয়া জান্নাত সালেহ্ ও পিতার পদাংক অনুসরণ করে আওয়ামীলীগ নেত্রী পরিচয়ে আটাব নেতৃত্বে আসেন এবং নিয়ম রক্ষার নির্বাচনে একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে অবৈধ কমিটির সকলকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।

আটাব সদস্যদে আস্থার অবমাননা করে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চলতে দেয়া যায় না বিধায় আপনার দপ্তরকে Money Laundering Prevention ACT (MLPA) ২০১২ (সংশোধিত-২০১৫) এর ধারা ৪ (১) ও ৪ (২) ও দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ৪০৭ ও ৪০৯ অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষতিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিভি/এসজি

মন্তব্য করুন: