দিয়ার তীরে কুপোকাত রোমান, বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ আর্চার জুটি

দিয়ার তীরে কুপোকাত রোমান, বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ আর্চার জুটি
‘সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে প্রিয়ার খোঁজে আসেন প্রেমিক’ প্রবাদটিকে সত্যি করলেন দেশের দুই আর্চার জুটি। সমুদ্র পাড়ি না দিলেও রেলগাড়িতে চড়ে সাড়ে ৫শ’ কিলোমিটার পথ শেষে ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে নিলেন। ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা, অতঃপর পরিণয়। জয় হলো ভালোবাসার।
বলছি জাতীয় পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন আর্চার দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানার কথা। একক কখনও বা একাসাথে জুটি বেঁধে খেলার মাঠ দাপিয়ে বেড়ালেও এবার জীবনসঙ্গী হয়ে অনন্তকাল পাড়ি দিতে বিয়ের পিড়িতে বসলেন এই জনপ্রিয় জুটি। জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজ জন্মভূমি নীলফামারীতে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন দিয়া।
আর্চারি ফেডারেশন, দুই পারিবারের স্বজন, শুভাকাঙ্খীরা উপস্থিতিতে আনন্দ উৎসবের কমতি ছিলো না বিয়েতে। বাঙালী সংস্কৃতির কৃষ্টি কালচার মেনেই আর্চার দিয়া সসিদ্দিকীর গায়ে কাঁচা হলুদ মাখিয়ে দেন স্বজনরা। নাচ গানে অনুষ্ঠানকে রঙিন করে তোলেন দুই খেলোয়াড়ের বন্ধু, স্বজন ও ভক্তরা।
বুধবার (৫ জুলাই) বিকালে নীলফামারীর স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পেরে দারুন খুশি এই দুই তারকা। প্রত্যাশা, আগামীতে ভালো কিছু করার। দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়াও চেয়েছেন দেশবাসীর কাছে।
দিয়া সিদ্দিকী জানিয়েছেন, প্রথমত খেলায় রোমান সানাকে টিম পার্টনার হিসেবে পেয়েছিলেন। তখন তাকে ভাইয়া করে ডাকা হতো। সেই থেকে ভালো লাগা। তারপর আস্তে আস্তে আমাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আজকে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হলো। আমাদের পরিবারও বিয়েতে মত পোষণ করেছেন।
দিয়া বলেন, যেহেতু বিয়ে হয়েছে সংসার ও খেলার মাঠটাকে আলাদা চোখে দেখি। তাছাড়া সবাই জানে বিয়ে হলে মানুষ কর্মটাকে গুরুত্ব দেয় বেশি। এছাড়াও দাম্পত্য জীবণে সুখের জন্য দেশবাসি ও ভক্তদের কাছে দোয়া চেয়েছেন এই তীরন্দাজ।
রোমান সানা বলেন, আজকে আমার জীবনের সব থেকে ভালো মুহুর্ত। বিয়ের পিঁড়িতে বসেছি। এছাড়া সবচেয়ে বড় কথা দিয়াকে আমার সহধর্মিনী হিসেবে পাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের যে আগে রিলেশন ছিলো। সেই রিলেশনটা আজকে যে একটা পূর্ণতা পাবে। সেটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত আমার জানা বিয়ে করলে রহমত বাড়ে। সেই দিক আমরা দুজনে মিলে আর্চারিকে যেনো অন্য লেভেলে নিয়ে যেতে পারি। সমসময় আমরা সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া দিয়া আমার থেকে খেলার মাঠে বেশি এক্টিভ থাকে। তিনি তাকে বেশি সাপোর্ট দিতে না পারলেও সবসময় সে আমাকে বেশি সাপোর্ট দিয়েছে। এখন যেহেতু সে আমার সহধর্মিনী হলো সেহেতু আমাকে বেশি সাপোর্ট দিবে। এছাড়াও আমার জানা মতে বিয়ের পর যেকোন বিষয়ে রহমত বৃদ্ধি পায়। আমরা দু’জনে এক হয়ে সেরাটা খেলার চেষ্টা করবো।
এই দুই জুটির বিয়েতে থাকতে পেরে বাঁধভাঙা খুশিতে আত্মহারা স্বজন ও ভক্তরা। মেয়ের বিয়েতে বেদনার সুর থাকলেও খুশি দিয়ার বাবা নূর আলম সিদ্দিকী ও মা শাহানাজ বেগম। মেধাবী দুই খোলোয়াড়ের জুটি শক্ত হওয়ায় আগামীতে ভালো কিছু করার আশা ফেডারেশন কর্মকর্তাদের।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজিব উদ্দিন চপল বলেন, অবশ্যই আমরা তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য শুভ-কামনা জানাচ্ছি। যারা অভিভাবক আছেন তারা সবাই দোয়া করবো, তাদের জীবন সুখের হোক, দীর্ঘজীবী হোক। তাদের দু’জনের পরিবারের বাবা-মাকে বুঝিয়ে আজকের এই আয়োজন। বাংলাদেশে আর্চারি নতুন একটি খেলা তারা দু’জনে দেশের জন্য ভালো কিছু করেছে। সবসময় প্রত্যাশা করবো আগামী অলিম্পিক গেমটায় ভালো করবে। ছিনিয়ে আনবেন বিজয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক পংকোজ ঘোষ, জেলা ওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: