৯৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে ধেয়ে আসছে অশনি!

প্রতীকী ছবি
শীত বিদায় নিয়েছে মাত্র একমাস হলো। চলছে ঋতুরাজ বসন্তকাল। স্বভাবত এই সময়ে আবহাওয়া শান্ত ও মিষ্টি থাকার কথা। কিন্তু চৈত্রের শুরুতেই জেকে বসেছে তাপদাহ আবার সমুদ্র উত্তাল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পেতে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পেলে যার নাম হতে পারে অশনি। আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশ নিকটবর্তী মিয়ানমার উপকূলে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে, ১২৯ বছর পর্যন্ত বাঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পেয়ে উপকূলে আঘাত হানলে এটি হতে যাচ্ছে বর্তমান শতাব্দীর প্রথম আগাম ঘূর্ণিঝড়। আর জলবায়ুবিদরা বলছেন, মার্চেই ঝড়ের আগাম ছুটে আসা ইঙ্গিত দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন কতটা বিরূপ প্রভাব নিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগর উপকূলের জন্য।
গত ১২৯ বছরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলেরা তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে মার্চ মাসে মোট ৮টি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে ৬টি বঙ্গোপসাগরে বাকি দুটির উৎপত্তি ছিলো আবর সাগরে। এই ৮টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ৬টি ঘূর্ণিঝড়ই বিলীন হয়েছে সমুদ্রে। যা আসতে পারেনি উপকূলের দিকে। বাকি দুটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে উপকূলে। এই দুটির মধ্যে একটি ১৯০৭ সালে শ্রীলঙ্কায় এবং অপরটি ১৯২৬ সালে তামিলনাড়ু উপকূলে আঘাত হানে।
তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১০০ বছর পর মার্চে আসা কোনো ঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে উপকূলের দিকে। যা হতে যাচ্ছে একবিংশ শতাব্দীতে মার্চে প্রথম কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাতের ঘটনা।
জলবায়ুবিদরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে মার্চ থেকেই শুরু করে জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের সময় থাকে। তারপর আবার সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ঝড়ের প্রবণতা থাকে। কিন্তু মার্চের আগ মুহূর্তে শীত বিদায় হয় বলে এই মাসে সাধারণও ঝড় থাকে না। তখন ঝড়ের অনুকূল আবহাওয়া তৈরিও হয় না। ফলে জলবায়ুগতভাবে মার্চ মাসকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় বলে মনে করা হয় না। কিন্তু এখন জলবায়ুর এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে যে মার্চেও ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। এটা সত্যির চিন্তার বিষয় বলে মনে করছেন জলবায়ুবিদরা।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: