আরও বাড়বে বৃষ্টিপাত, চলতি সপ্তাহেই আকস্মিক বন্যার শঙ্কা

প্রতীকী ছবি
দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম এবং মেঘালয়ের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ইতোমধ্যে অস্বাভাবিকভাবে পানি বেড়েছে হাওর অঞ্চলের নদীগুলোতে। হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পানির চাপে ভেঙেছে হাওরের কয়েকটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। এবার বন্যা তথ্যকেন্দ্র বলছে, চলতি সপ্তাহে আকষ্মিক বন্যার কবলেও পড়তে যাচ্ছে হাওর অঞ্চল।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এবং অন্যান্য বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাসমূহ থেকে প্রাপ্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলতি সপ্তাহে স্বাভাবিক থেকে বেশী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে ১০ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম (বরাক অববাহিকা) এবং মেঘালয় প্রদেশের স্থানসমূহে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ১০ এপ্রিল হতে ১৭ এপ্রিল নাগাদ উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, যদুকাটা, লুভাছঢ়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালী, সোমেশ্বরী, ভুঘাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এর ফলে এই সময়কালের শেষার্ধে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার কতিপয় স্থানে আকষ্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে সোমবার সকালে দেওয়া দৈনিক বুলেটিনে (২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস) সংস্থাটি জানায়, বর্তমানে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান নদনদী সমূহের সমতল হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে নেত্রকোনা জেলার প্রধান নদনদী সমূহের পানি বাড়ছে। হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার প্রধান নদনদী সমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে।
তবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারত আবহাওয়া অধিদফতরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেন, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার প্রধান নদনদীগুলোর পানি কমতে পারে অপরদিকে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে নাকুগাঁওয়ে ৩৬ ও ইটাখোলা স্টেশনে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জলপাইগুঁড়িতে ৬০, তেজপুরে ৩৮, সিলচরে ৩৯ ও কৈলাশহরে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই সময়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণাধীণ নদনদীর ৩৯টি স্টেশনের মধ্যে ১৮টিতে পানি বেড়েছে এবং ২১ পয়েন্টে পানি কমেছে বলেও জানানো হয় বুলেটিনে।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: